Wellcome to National Portal
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ৮ জুলাই ২০২৫

গ্রামীণ বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীকে কম্যুনিটির অংশগ্রহণে সহায়তা প্রদান জোরদারকরণ

গ্রামীণ বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীকে কম্যুনিটির অংশগ্রহণে সহায়তা প্রদান জোরদারকরণ*

পটভূমি

বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ। প্রবীণ বলতে তাদেরকে বুঝানো হয়েছে, যাদের বয়স ৬০ বছরের বেশি। ‘জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২’ এর প্রাথমিক প্রতিবেদন বলছে, দেশে ৬০ বছরের বেশি বয়সী মানুষের সংখ্যা ১ কোটি ৫৩ লাখ ২৬ হাজার ৭১৯ জন। তারা মোট জনসংখ্যার ৯.২৮%। ২০১১ সালের জনশুমারিতে এ হার ছিল ৭.৪৭%। জাতিসংঘের জনসংখ্যা উন্নয়ন তহবিলের (ইউএনএফপি) প্রাক্কলন মতে, ২০৫০ সালের মধ্যে বাংলাদেশে ৬০ বছর বা তার বেশি বয়সীদের সংখ্যা হবে ৩.৬ কোটি এবং মোট জনসংখ্যার ২২%। এ ধারা বৈশ্বিক প্রবণতার সঙ্গেও সামঞ্জস্যপূর্ণ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বে প্রতি ৬ জনের মধ্যে ১ জনের বয়স হবে ৬০ বছর বা তার বেশি। দেশের মানুষের গড় আয়ু বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রবীণ মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। জনশুমারি আরো বলছে, দেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কম। অন্যদিকে প্রবীণ জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার বেশি।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) জাতীয় প্রতিবন্ধী ব্যক্তি জরিপ-২০২১ এর চূড়ান্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী দেশের মোট জনসংখ্যার ২.৮০% প্রতিবন্ধী। এই প্রতিবন্ধীর মধ্যে পূরুষ ৩.২৮% এবং নারী ২.৩২%। এক্ষেত্রে ১১ ধরনের প্রতিবন্ধিতার শিকার তারা। এ ছাড়া দেশের মোট প্রতিবন্ধীর মধ্যে শহরে জনসংখ্যার ২.৪৫% এবং পল্লী এলাকায় ২.৮৯%। প্রতিবন্ধী মানুষের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শারীরিক প্রতিবন্ধী ১.৩৫%। এছাড়া অটিজম, মানসিক অসুস্থতা, দৃষ্টি, বাক, শ্রবণ এবং বুদ্ধি প্রতিবন্ধীর সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য।

প্রবীণরা হলেন ইতিহাসের সূত্র, জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার ভান্ডার, চলমান সমাজের সংযোগ সেতু। বাংলাদেশের বেশিরভাগ প্রবীণ গ্রামগঞ্জে বসবাস করেন। নিজের সবটুকু উজাড় করে সন্তানকে মানুষ করেছেন আর এখন সন্তানের এমন নৈতিক ও মানবিক অবক্ষয় দেখে দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে মৃত্যুর প্রহর গুনছেন। সন্তানরা মা-বাবার ভরণ-পোষণের সব দায়িত্ব নিতে ধর্মীয়, মানবিক ও নৈতিকভাবে বাধ্য। কিন্তু গ্রামীণ প্রবীণরা অনেক সময় সন্তানদের কাছ থেকে যথোপযুক্ত সাড়া পান না। সমাজের চোখেও তারা অবহেলার পাত্র। সমাজ ও পরিবার থেকেও প্রায়শই বঞ্চনা আর নেতিবাচক আচরণের শিকার হন প্রতিবন্ধী ব্যক্তি। বঞ্চনা আর বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে নিজের অধিকার আদায়ে প্রতিবন্ধীরা নানাভাবে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে। প্রতিবন্ধী শিশুরা স্বাভাবিক শিশুদের তুলনায় সবসময়ই পিছিয়ে থাকে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে সবার সমান সুযোগ থাকলেও নানান প্রতিবন্ধকতার কারণে তারা সঠিকভাবে সুযোগ পায় না।

 

উদ্দেশ্য

ক)    মূল উদ্দেশ্য

গ্রামীণ বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্তিতে কম্যুনিটির অংশগ্রহণে সামাজিক ও মনস্তাত্ত্বিক সহায়তা প্রদান করার পাশাপাশি অর্থনৈতিক উন্নয়ন কর্মকান্ডে সক্রিয় অংশগ্রহণের লক্ষ্যে খোঁজ করা। এছাড়া টেকসই শিক্ষা ও দক্ষতা বৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আত্ম-সক্রিয়তা অর্জন পূর্বক দারিদ্র্য হ্রাস করা, প্রত্যাশিত মূল্যবোধ সুপ্রতিষ্ঠায় আইনগত সুরক্ষা, কল্যাণমূলক নীতিমালা এবং স্বাস্থ্য সেবা ও পুষ্টি উন্নয়নসহ মৌলিক অধিকারসমূহ সমন্বিতভাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে তাদের সার্বিক জীবনধারার মানোন্নয়ন কার্যক্রম জোরদার করা।

 

খ)    সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্যাবলী : এই প্রকল্পের সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্য হলো :

(ক)    টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (SDG) ও সরকারের লক্ষ্য অর্জনে গ্রামীণ বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্তিতে সংগঠন তৈরি, আত্ম-সক্রিয়তা, দলীয় সক্ষমতা ও নেতৃত্বের উন্নয়ন সাধনে সাংগঠনিক ব্যবস্থাপনাগত দক্ষতা বৃদ্ধি;

(খ)    উপকারভোগী জনগোষ্ঠীর সৃজনশীলতা ও কর্মোদ্দীপনা সৃষ্টিসহ সক্ষমতা উন্নয়নপূর্বক দারিদ্র্য হ্রাস, সঞ্চয়ের মাধ্যমে পুঁজি গঠন, প্রণোদনা ও ঋণ সহায়তা এবং আত্মনির্ভরশীলতা অর্জনে পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করা;

(গ)   ব্যক্তি, পরিবার এবং কম্যুনিটি পর্যায়ে বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীদের প্রতি বৈষম্য ও অবহেলা প্রতিরোধ, টেকসই শিক্ষা, প্রত্যাশিত মূল্যবোধ ও অধিকার সুপ্রতিষ্ঠা, স্বাস্থ্য-পুষ্টি উন্নয়ন ইত্যাদি বিষয়ক ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করা;

(ঘ)   সকল সরকারি ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা থেকে পরিষেবা প্রাপ্তির ব্যবস্থা করা এবং সহায়ক প্রযুক্তি ও উপকরণ সামগ্রী ইত্যাদি সংগ্রহের জন্য তথ্যায়ন এবং সংযোগ স্থাপনে সহায়তা প্রদান ও কার্যকর নেটওয়ার্ক স্থাপন করা।  

 

  • প্রকল্প এলাকা নির্ধারণ, গ্রামীণ বয়স্ক ও বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন জনগোষ্ঠীকে সংগঠিত করে উপানুষ্ঠানিক দল গঠন;
  • উপকারভোগীদের সার্বিক জীবন মানোন্নয়ন কার্যক্রম উপযোগী বিশেষ প্রশিক্ষণের (কেয়ারগিভার, নার্সিং, আয়বর্ধন মূলক) মাধ্যমে দক্ষতা উন্নয়ন;
  • বয়স্ক ও বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন জনগোষ্ঠীর জন্য নিয়মিত বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা প্রদান, ফলোআপ স্বাস্থ্য চেকআপ এবং সহায়ক উপকরণ সামগ্রী বিতরন করা: উল্লেখ্য প্রতিটি সংগঠনকে প্রকল্প থেকে একটি করে সেট (গ্লুকমিটার, বিপি মেশিন এবং ডিজিটাল থার্মোমিটার ইত্যাদি) প্রদান করা হয়েছে। সংগঠনের সদস্যরা এবং এলাকার দুস্থ রোগী যার যখন প্রয়োজন হয় সংগঠন থেকে তাদেরকে ব্যবহারের জন্য সেয়া হয় এবং কেয়ারগিভার প্রশিক্ষণ প্রাপ্তরা উক্ত ডিভাইসগুলির মাধ্যমে সেবা প্রদান করছে।

 

  • উঠান বৈঠক এবং সাংস্কৃতিক কার্যক্রম পরিচালনা ও সুস্থ বিনোদনের লক্ষ্যে কমন স্পেস নির্ধারণ;
  • সরকারী-বেসরকারী সংস্থা থকে সেবা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে সংযোগ স্থাপনে সহায়তা প্রদান ও কার্যকর নেটওয়ার্ক স্থাপন করা;
  • কম্যুনিটির অংশগ্রহণে সামাজিক ও মনস্তাত্ত্বকি সহায়তা প্রদান এবং অ্যাডভোকেসি ক্যাম্পেইন আয়োজন করা;
  • স্বাস্থ্য-পুষ্টি ও পরিবেশ উন্নয়ন বিষয়ে সহায়তা প্রদান;
  • গ্রাম পর্যায়ে গ্রামভিত্তিক কার্যক্রমের জন্য বার্ষিক কার্যক্রম পরিকল্পনা, বাস্তবায়ন ও মূল্যায়ন।

 

 

প্রায়োগিক গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনার প্রক্রিয়া ও সম্ভাব্য ফলাফল

ক্র. নং

কার্যক্রম

সম্ভাব্য ফলাফল

দীর্ঘ মেয়াদী প্রভাব

1

প্রকল্পের সুফলভোগীদের অন্তর্ভুক্তিতে গ্রাম সংগঠন তৈরি

সংগঠনের মাধ্যমে গ্রামীণ বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠী নিজেদের সার্বিক জীবনধারার মান উন্নয়নে সচেতনতা বৃদ্ধির সুযোগ পাবে। এছাড়া সংগঠিত মূল্যবোধ ও নেতৃত্বের বিকাশ ঘটবে

গ্রাম সংগঠনে পুঁজি গঠনের মাধ্যমে আত্মনির্ভরশীলতা বৃদ্ধি পাবে।

2

স্বাস্থ্যগত সবো প্রদান ও স্বাস্থ্য চকে আপ সর্ম্পকে সচতেনতা বৃদ্ধি এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী বতিরণ

ব্যক্তগিত স্বাস্থ্য সুরক্ষা সর্ম্পকতি বষিয়ে সম্যক জ্ঞান লাভরে পাশাপাশি কুমল্লিার বভিন্নি হাসপাতালে ২৫-৩০% র্পযন্ত ডসিকাউন্ট পাব।

ব্যক্তগিত ও পারবিারকি স্বাস্থ্যরে উন্নয়ন হবে

3

প্রকল্পভুক্ত গ্রাম সংগঠনের উপকারভোগীদের সামাজিক, মনস্তাত্ত্বিক ও সাংস্কৃতিক প্রত্যাশিত মূল্যবোধ বিকাশে উদ্বুদ্ধ করা

নিজেদের মধ্যে মিথস্ক্রিয়ার মাধ্যমে তারা পারস্পরিক সহযোগিতার ক্ষেত্র সৃষ্টি করতে পারবে। এছাড়া একে অপরকে মানসিক সহায়তা প্রদান করার সুযোগ লাভ করবে।

পারস্পরিক মিথস্ক্রিয়ার মাধ্যমে মনস্তাত্ত্বিক ও সামাজিক সমৃদ্ধি ঘটবে।

4

স্বাস্থ্য সেবার জন্য Health Card তৈরিতে তথ্য সংগ্রহ

Health Card প্রদর্শন করে কুমিল্লার বিভিন্ন হাসপাতালে স্বাস্থ্য সেবা ছাড় পাওয়া যাবে। বর্তমানে এই কার্ডের সাথে জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য সন্নিবেশের কাজ চলমান রয়েছে।

নিয়মিত চেকআপ করার মাধ্যমে স্বাস্থ্যের উন্নয়ন হবে। ধ্যমে মনস্তাত্ত্বিক ও সামাজিক সমৃদ্ধি ঘটবে।

5

বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর অধিকার, সুরক্ষার বিধি, আইনগত বিধি বিধান ও নীতিমালা অবহিতকরণ           

জাতীয় বিধি বিধান সম্পর্কে অবহিত হবে এবং নিজেদের অধিকার ও কর্তব্য সম্পর্কে সচেতনতার বিকাশ ঘটবে।

নিজেদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হবে।

6

বিভিন্ন জাতীয় দিবস (যেমনঃ প্রতিবন্ধী দিবস, জনসংখ্যা দিবস, প্রবীণ দিবস, মানবাধিকার দিবস) উপলক্ষ্যে এডভোকেসি ক্যাম্পেইন পরিচালনা

বৃহত্তর পরিসরে দিবসগুলোর মূল প্রতিপাদ্য এবং বিধি বিধান এবং প্রয়োজনীয় জ্ঞান অর্জন করবে। এছাড়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রদত্ত সেবা সম্পর্কে অবহিত হবে।

সরকারের কার্যক্রমের সাথে নিজেদের কার্যক্রম এগিয়ে নিতে পারবে এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রদত্ত সেবাসমূহ গ্রহণে সচেতন হবে।

7

বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠী নিয়ে সভা করার জন্য কমন স্পেস/স্থান নির্বাচন 

পারস্পরিক মত বিনিময়ের মাধ্যমে কোয়ালিটি সময় কাটাবে এবং তাদের মানসিক বিকাশ ও নেতৃত্ব উন্নয়ন সহজতর হবে। ধনুয়াইশ ও দীঘলগাঁও গ্রামে উপকারভোগীদের জন্য একটি কমন প্ল্যাটফর্ম নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে উপকারভোগীরা সেখানে বসা শুরু করেছেন।

সুস্থ্য বিনোদন ও বিকাশে মানসিক প্রশান্তি লাভ করবে।

8

বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী বান্ধব কার্যক্রম গ্রহণ বিষয়ক প্রশিক্ষণ প্রদান

বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী বান্ধব প্রশিক্ষণের বিষয় নির্বাচন যা তাদের অর্থনৈতিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টি করবে।

নিজেদের দক্ষতা কাজে লাগিয়ে আত্মনির্ভরশীল হবে।

9

কেয়ারগিভার প্রশিক্ষণ

বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর উপযোগী স্বাস্থ্য সেবা প্রদানের সক্ষমতা বৃদ্ধি।

বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর প্রতি পরিবারের সদস্যদের ইতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি।

 

প্রায়োগিক গবেষণার ফলাফল

গবেষণার চারটি এলাকায় গ্রাম সভা ও ক্যাম্পেইন কর্মশালায় বয়স্ক ও বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন জনগোষ্ঠীর মধ্যে সংগঠিত হওয়ার ব্যাপক আগ্রহ পরিলক্ষিত হয়। তাঁরা তাদের উপযোগী অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িত হতে আগ্রহী।

সুফলভোগীদের পরিবারের সদস্যদের কেয়ারগিভার প্রশিক্ষণ প্রদানের ফলে প্রাথমিক স্বাস্থ্য কীট ব্যবহার করে বয়স্ক ও বিশেষভাবে সক্ষম জনগোষ্ঠীর প্রতি পরিবারের মমত্ববোধ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং পরিবারের সদস্যগণ বয়স্ক ও বিশেষভাবে সক্ষম জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য পরিবীক্ষণ করতে পারে। এখানে উল্লেখ্য কেয়ারগিভার প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বয়স্কদের এবং বিশেষভাবে সক্ষম ব্যাক্তিদের শিক্ষা দেয়ার বিভিন্ন কৌশল, বিভিন্ন পরিচর্যা (যেমনঃ দাঁত এর যত্ন নেওয়া, পায়ের যত্ন নেয়া, শরীরের বিভিন্ন অংগের যত্ন নেয়া, পেরেনিয়াল কেয়ার প্রভৃতি), গ্লুকোমিটার এর মাধ্যমে ডায়বেটিস পরিমাপ করা, জ্বর পরিমাপ, উচ্চ রক্তচাপ পরিমাপ,পালস অক্সিমিটার ব্যবহার এবং ফিজিও থেরাপির নানা রকম কৌশল হাতে কলমে শিখানো হয়েছে। এ পর্যন্ত ৬টি কেয়ারগিভার প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। প্রশিক্ষণ প্রাপ্তরা বর্তমানে পরিবার এবং এলাকার অনেককেই সেবা দিচ্ছে।

নিয়মিত স্বাস্থ্যসেবা ও সহায়ক স্বাস্থ্য উপকরণ সামগ্রী সরবরাহের ফলে বয়স্ক জনগোষ্ঠীর মধ্যে ব্যাপক সাড়া পাওয়া গেছে। ফলে প্রায়োগিক গবেষণার মাধ্যমে আরো বিস্তৃত আকারে স্বাস্থ্যসেবা ও স্বাস্থ্য উপকরণ প্রাপ্তিতে আগ্রহী ।

স্বাস্থ্য সেবা প্রাপ্তির জন্য Health Card তৈরি এবং বিভিন্ন হাসপাতালের সাথে লিংকেজঃ উক্ত প্রায়োগিক গবেষণা প্রকল্পের আওতায় উপকারভোগীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার পরবর্তী পর্যায়ে তাদের মাঝে Health Card বিতরণ করা হয়। উক্ত Health Card প্রদর্শন করে কুমিল্লার বিভিন্ন হাসপাতালে (NHN ডায়বেটিক হাসপাতাল, ময়নামতি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, হলিকেয়ার হাসপাতাল) স্বাস্থ্য সেবায় ২৫% ছাড় পাও স্বাস্থ্য সেবা প্রাপ্তির জন্য Health Card তৈরি এবং বিভিন্ন হাসপাতালের সাথে লিংকেজ

গ্রামীণ বয়স্ক ও বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন জনগোষ্ঠীদের Reduced Rate-এ এ্যাম্বুলেন্স সেবা প্রাপ্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেবা গ্রহণের মাধ্যমে সুফলভোগীগণ উপকার পাচ্ছেন।

সমাজসেবা কার্যালয়ের সাথে কার্যকর লিঙ্কেজ স্থাপন করা হয়েছে। ফলশ্রুতিতে থ্যালাসেমিয়া রোগীর জন্য আর্থিক সহযোগিতা প্রাপ্তিতে কার্যকর নেটওয়ার্ক স্থাপন করা হয়েছে।

জাতীয় পরিচয়পত্র/ভাতা প্রাপ্তি ও সংশোধনের ক্ষেত্রে ত্রুটি বিচ্যুতি নিরসনে ইউনিয়ন পরিষদের সাথে সংযোগ স্থাপন করা হয়েছে।

তিনটি সংগঠনের ৬০ জন বয়স্কদের উপর একটি সমীক্ষা করা হয়েছে। এতে দেখা যায় তাদের জীবন মান এর উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন হয়েছে।

বিভিন্ন সভা ও ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠানে পারস্পরিক মত বিনিময়ের মাধ্যমে জীবনের প্রতি তাদের ইতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি হয়েছে।

সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে লিংকেজ স্থাপনের ফলে পরিসেবাসমূহ গ্রহণ করে উপকৃত হচ্ছে।

সাকসেস স্টোরিঃ

১। কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার দীঘলগাঁও গ্রামের প্রবীন সদস্য জনাব আলী হোসেন দুর্ঘটনা কবলিত হয়ে মারাত্মক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং তিনি হাঁটতে পারতেন না। তাঁকে এই প্রকল্প থেকে হুইল চেয়ার দেয়া হয় এবং চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়। বর্তমানে তিনি অনেক ইম্প্রুভ করেছেন, এখন অনেক ক্ষেত্রেই হুইল চেয়ার বিহীন হাঁটতে পারেন।

২। ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার চান্দলা সংগঠনের অধীন গুচ্ছগ্রাম এর বিশেষ ভাবে সক্ষম কিশোরী সোনিয়া বয়স ষোল জন্ম থেকেই হাটতে পারতো না। তাঁকেও এই প্রকল্প থেকে বিশেষ ধরনের অত্যাধুনিক ছড়ি দেয়া হয় (যেটি তার উচ্চতা বা সুবিধানুযায়ী বাড়ানো, কমানো যায়)। এটি দেয়ার পর মোটামুটি তিন মাসের মধ্যেই সোনিয়া অনেক ভাল ভাবে হাটতে পারে। এবং সে ও তার পরিবার অনেক খুশী। সোনিয়াকে পরবর্তিতে আর কি ধরনের সেবা বা চিকিৎসা দেয়া যায় তা গবেষণা দল ভাবছে।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাঃ

২০২৬ সাল থেকে প্রকল্প এলাকা বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে এবং সংগঠন বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। এক্ষেত্রে শিশুকের সাথে কাজ করার প্রক্রিয়া চলমান।

কুমিল্লা সরকারী নার্সিং ইন্সটিটিউটের সাথে কলাবরেশন এর মাধ্যমে কেয়ারগিভার প্রশিক্ষণ এর মেয়াদ বৃদ্ধি করে প্রফেশনাল কেয়ারগিভার তৈরি করা। এছাড়াও CRPএর সাথে কাজ করার লক্ষে সমঝোতা স্বাক্ষর করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

কুমিল্লাস্থ আলেখার চর চক্ষু হাসপাতালের সাথে লিংকেজ স্থাপন এর উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। এতে করে প্রকল্পের বয়স্ক এবং বিশেষ ভাবে সক্ষম ব্যাক্তিরা বিনামুল্যে চিকিৎসা সেবা পাবে।

কমিউনিটি ক্লিনিকের সাথে লিংকেজ স্থাপন এর উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।